Now Reading
ন্যায়-এর ছদ্মবেশ

ন্যায়-এর ছদ্মবেশ

Avatar photo
ন্যায়

নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা এবং অপরাধের বৃদ্ধির পেছনে সমাজের অমানবিক দিকগুলো নিয়ে এই নিবন্ধ। মৃত্যুদণ্ডের প্রকৃত ন্যায় -বিচার প্রদানে সক্ষমতা ও সমাজের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও এই প্রবন্ধে গভীরভাবে ভাবা হয়েছে। মানবতার বীজ রোপণ ও সহানুভূতিশীল সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হবে।

মানব সভ্যতার অন্ধকার দিকগুলোতে আমাদের চোখ যেন মুছে গেছে। আমাদের সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেন এটি একটি নিষ্ঠুর খেলা। প্রশ্ন উঠছে—মানুষের রক্তে কেন এই অমানবিক খেলা? বেঁচে থাকার জন্য কি এই জ্বালা? নিরীহ কচি প্রাণ, ক্ষুধা নেই তার, তবুও নারীর আর্তনাদ গভীর রাতে শুনতে কারোর কান পাতা নেই। শাসন ব্যবস্থার পেশী শক্তি যতই কঠোর হোক, ধর্ষকের মনে কীভাবে ভয় প্রোথিত হবে? মৃত্যুদণ্ড কি সত্যিই ন্যায় -এর পরিচয়? অথবা এটি সমাজের ব্যথা চাপা দেয় ক্ষণিকের মিষ্টি কথায়? শিশু কি অপরাধ করেছে, যে তাদের উপর এই নিষ্ঠুরতা নেমে এসেছে? নারীর প্রতি আগ্রাসী মনোভাব, শিশুদের নিরাপত্তাহীনতা—এ যেন এক বিভীষিকাময় বাস্তবতা। অবলীলায় তারা লুঠ হয়ে যাচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে, এবং তাদের প্রতি সহানুভূতির অভাব সমাজে প্রকট।

আমরা জানতে চাই—মৃত্যুদণ্ড আসবে, কিন্তু ন্যায় কি ফিরবে? আমাদের মানসিকতার বিষগুলো কি লুকিয়ে থাকবে? সামাজিক পরিবর্তন কি শুধুই দণ্ডে নির্ভর করবে? অথবা আদর্শ গড়ে তুলতে হবে মমতার ছোঁয়ায়? নারীর গায়ের ভার এবং শিশুর চোখের জল—কবে পাবে আসল সান্ত্বনা? মৃত্যুদণ্ডের পরেও, আমাদের প্রতিরোধের শুরু কি হবে কেবল রাগ?

একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের ঘটনার পর আমাদের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনতে হবে। শুধুমাত্র কঠোর শাস্তি দিয়ে কি পরিস্থিতির উন্নতি হবে? সত্যের আলো ফুটবে সেদিন, যেদিন ধর্ষক নয়, মানবতার বীজ রোপিত হবে। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, আমাদের সমাজের ভিত্তিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সমাজে সহানুভূতির অঙ্গীকার করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি। মৃত্যুদণ্ড আসবে, থামাতে হয়তো অপরাধ, কিন্তু প্রতিরোধের শুরু তখনই হবে, যখন আমরা মানবতার বীজ বুনতে সক্ষম হব।

এই ভাবনাগুলো থেকেই একটা কবিতা লেখার চেষ্টা করেছি।আমার লেখা দশম কবিতা আপনারা পড়ুন পড়লে নিশ্চয়ই মনের কষ্টটা বুঝতে পারবেন আমি জানি আমার এই ভারতবাসী বাংলার প্রত্যেকটি মা বোন প্রত্যেকটি মানুষের মনেই একই প্রশ্ন বুকফাটা আর্তনাদ।

ন্যায় -এর  ছদ্মবেশ।

একি মৃত্যুদণ্ডের আগল

মানুষের রক্তে কেন এই খেলা,

বেঁচে থাকার গল্প কি এত জ্বালা?

নিরীহ কচি প্রাণ, ক্ষুধা নেই তাতে,

বিপন্ন নারীর আর্তনাদ কে শোনে রাতে?

শাসনের পেশী, কঠোরতা মুঠোয়,

তবু ধর্ষকের দ্বিধা কই? নিশ্বাসে মুছে যায় ভয়।

মৃত্যুদণ্ড কি আসলেই ন্যায়ের পরিচয়?

নাকি সমাজের ব্যথা চাপা দেয় ক্ষণিকের মিষ্টি কথায়?

শিশু কি অপরাধ করেছিলো এমন,

যে এদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল অমানবিক মন?

নারী বা কন্যা, উষ্ণ আশ্রয়ের খোঁজে,

হাত বাড়ালো ধর্ষক, যেন শিকার খোঁজে।

মৃত্যুদণ্ড আসবে, ন্যায় কি ফিরবে তবে?

কীভাবে বুঝবো কে কার বিচার নেবে?

See Also
ড্ৰাগ্‌ছ

নিয়মে হয়তো কঠোর শাস্তি বাঁচাবে,

কিন্তু মানসিকতার বিষ কি লুকিয়ে রইবে?

এই সমাজ কি শুধুই দণ্ডে মুক্ত হবে?

নাকি মমতার ছোঁয়ায় আদর্শ গড়ে ওঠবে?

নারীর গায়ের ভার, শিশুর চোখের জল,

এরা কবে পাবে আসল সান্ত্বনার ফল?

মৃত্যুদণ্ড আসে, থামাতে হয়তো অপরাধ,

কিন্তু প্রতিরোধের শুরু কি হবে কোনো রাগ?

সমাজ বদলাবে, সত্যের আলো ফুটবে—

যেদিন ধর্ষক নয়, মানবতার বীজ রোপিত হবে।

What's Your Reaction?
Excited
4
Happy
1
In Love
2
Not Sure
0
Silly
1
View Comments (2)
  • এই উদ্ভট ও অবান্তর কল্পনা বিলাসিতার আমি বিরোধী।

    মানবাধিকার, মানবিকতা, মানুষ – এসবই শুধুই “মানুষ”-এর জন্য। ইতর জানোয়ারেরও অধম কতকগুলো ক্লীবের জন্য নয়।

    আমি যেমন বলতে পারি – বসুধৈব কুটুম্বকম্…. তেমনি বলতে পারি – धर्म एव हतो हन्ति धर्मो রক্ষিত রক্ষিতঃ ।
    तस्माद् धर्मो न हन्तव्यो मा नो धर्मो हतोऽवधीत् ॥

    অর্থাৎ, ধর্ম তাকেই রক্ষা করে যে ধর্মকে রক্ষা করে। এখানে ধর্ম মানে মানব ধর্ম। অবশ্য অর্বাচীনের চেতনায় প্রচারের লোভ লকলক করে।

    সন্তানকে আত্মরক্ষার জন্য আক্রমক ভাবেই গড়ে তুলতে শিখুন!

Leave a Reply

Your email address will not be published.


Scroll To Top