Now Reading
ভারতীয় গণতন্ত্র : সংখ্যার বিপরীতে গুণগত উৎকর্ষ

ভারতীয় গণতন্ত্র : সংখ্যার বিপরীতে গুণগত উৎকর্ষ

Avatar photo
ভারতীয় গণতন্ত্র

ভারতীয় গণতন্ত্র নিয়ে প্রচুর আলোচনার প্রয়োজন, বিশেষত কীভাবে সাধারণ মানুষের ক্ষমতা ক্রমশ রাজনৈতিক দলগুলির উঁচু নেতৃত্বের হাতে চলে গিয়েছে এবং গণতন্ত্রের মূল চেতনা হারিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সমস্যা, যেমন অশিক্ষা, কুসংস্কার এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবের কারণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ দুর্বল হয়েছে।

ভারতবর্ষ পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে একটা উচ্ছাসমুলক দাবি অনেকদিন ধরেই হয়ে আসছে। এই বৃহত্তম শব্দটার ভিত্তি হলো ভারতের বিপুল জনসংখ্যা। অর্থাৎ দাবিটা সংখ্যাগত, গুণগত নয়। তার সাথে আজকাল যে কথাটা খুব বেশি করে উচ্চারিত হয় তা হলো – মাদার অফ ডেমোক্রেসি। কোন অর্থে ভারত মাদার অফ ডেমোক্রেসি – তার কোনো সুস্পষ্ট ও মনোজ্ঞ ব্যাখ্যা কেউ অবশ্য এখনো সামনে নিয়ে আসেননি। কিন্তু গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায়, গণতন্ত্রের যে সংজ্ঞা মননশীল বিশ্বে মান্যতা পায়, সেই অর্থে ভারতীয় গণতন্ত্রে আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পর তার উপর স্পষ্ট আলোকপাত চারিদিকে হ‌ওয়া প্রয়োজন।
কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা উত্তর প্রদেশে আতিক আহমেদ নামের একজন কুখ্যাত মাফিয়া ও বহু খুনের অপরাধে অপরাধী, সে নিজেই পুলিশ হেফাজতে থাকার মধ্যেই বহুজন সমক্ষে আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়। তার একটা অন্য বড় পরিচয় সে ছিল দীর্ঘদিন একজন সাংসদ, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, দেশের একজন মাননীয় আইন প্রণেতা। বৃজভুষন শরন সিং নামের একজনের সম্বন্ধে অভিযোগের কথাও সবাই জানেন। এই ব্যক্তিটিও এই কদিন আগে পর্যন্ত ছিল একজন ভীতিজনক দোর্দন্ডপ্রতাপ সাংসদ ও দেশের একজন আইন প্রণেতা। কি ভাবে এরা সাধারণ মানুষের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হতে পারে? অথচ বহুবার এটা প্রমানিত হয়েছে যে ভারতের সাধারণ মানুষ একেবারে নির্বোধ ভোটদাতা নয়। প্রয়োজন বোধে সঠিক সময়ে সরকার পাল্টে দেবার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তারা। তবু কি করে এই আতিক ও বৃজভুষনরা দল পাল্টে পাল্টে দশকের পর দশক তাদের সাংসদ পদটি বহাল রাখতে সক্ষম হয়? তাহলে কোথায় সাধারণ মানুষের অসহায়তা?
আপা‌তঃ দৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় ভারতীয় গণতন্ত্র শাসনব্যবস্থা চলছে। কিন্তু বাস্তবে কখনোই স্বাধীন ভারতের গণতন্ত্র সম্পুর্ণ ভাবে গনতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন, দায়িত্ব ও অধিকার সচেতন নাগরিকের দ্বারা সঞ্চালিত একটা গণতন্ত্র ছিলনা। সময়ের সাথে দ্রুত এক উন্নত গণতন্ত্রে উত্তরণের আশা আকাঙ্খা নিয়ে যদিও যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা লাভের লগ্নে, কিন্তু অপ্রিয় মনে হলেও অতি সত্যি কথা এটাই যে, অশিক্ষা, কুসংস্কার, রোগ-জড়াজীর্ণতা, অপুষ্টি ইত্যাদিতে পিষ্ট এক বিপুল জনবোঝাই এই দেশে হঠাৎ-প্রাপ্ত গনতান্ত্রিক অধিকার সম্পুর্ণ ভাবেই অজ্ঞানের কন্ঠে মুক্তার মালার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কোনো বস্তুর মূল্যজ্ঞান না থাকলে অপরে তা হাত থেকে তুলে নিয়ে যায়, বড়জোড় দুপয়সা হাতে ধরিয়ে দিয়ে। ভারতের এই বিশাল সংখ্যক মানুষের সাথেও তাই হয়েছে। তাদের হাতে মুক্তার মালার খাপটা শুধু র‌ইল। মালা চলে গেল অন্য হাতে। সাধারণ মানুষ শুধু ভোট দিল। কিন্তু ভাগ্য তৈরি হলো সেই অন্য লোকের। জয়ী হতে থাকলো সেই অন্য লোকেরা, বংশ পরম্পরায়। মানুষ শুধু ভোট দিয়ে আঙ্গুলে কালির ছাপ লাগাতে পারাটাকেই মনে করলো গনতন্ত্র এবং ভাবলো এটুকুই তাদের অধিকার। কিন্তু এ হলো স্বাধীনতার পর প্রথম লগ্নের কথা। রাজনীতি তখনো এতো দুর্বিনীত হয়নি। নিজস্ব ভাবনা শক্তি, ও চিন্তার স্বাধীনতার অভাবে অশিক্ষিত প্রজাকুল তৎকালীন রাজা মহারাজাদের আদেশ শিরোধার্য করে একজোটে কোনো এক পক্ষে ভোট দিয়ে তৃপ্ত থাকত সদ্য স্বাধীন ভারতে।
এই ভোট আদায়ের প্যাটার্নে ক্রমশঃ পরিবর্তন আসে। এক দফায় গুন্ডা মাফিয়াদের দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট দিকে ভোট দেওয়ানোর প্রথা জোরদার ভাবে কায়েম হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল সেই প্রথা সারা দেশে। তবু বলা হয়েছিল ভারতবর্ষ একটা গণতন্ত্র।
পরবর্তী পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে কায়েম হয়েছিল আরেক দৌড়াত্য, যার নাম সায়েন্টিফিক রিগিং – যেখানে কিছু ব্যাক্তিগত মাফিয়া বা গুন্ডা নয় – গোটা একটা রাজনৈতিক দল, যাদের নাকি সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠাই ছিল লক্ষ্য, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণতন্ত্রের শেষ লজ্জাবোধটাও পায়ের তলায় মাড়িয়ে দিয়ে মানুষকে চোখ রাঙিয়ে বলে দিল আপনাকে ভোট দিতে হবেনা। আপনার ভোট পার্টির ছেলেরা দিয়ে দেবে। আপনি বাড়ি যান। মানুষ অসহায় ভাবে বাড়ি ফিরে গেল দশকের পর দশক। কেউ বুঝে নিল এতে সর্বহারা মেহনতি মানুষের ক্ষমতায়ন হচ্ছে, বাকিরা ভয়ে বা স্তম্ভিত হয়ে মুখের ভাষা হারিয়ে চুপ থাকলো। কিন্তু গণতন্ত্রের দায় কাঁধে নিয়ে কোনো দিন কেউ পথে নেমে এলোনা এর প্রতিকার করতে। নাগরিক চেতনায় গনতন্ত্র বোধ কতটা শিকড় গাড়তে পেরেছিল স্বাধীনতার পঞ্চাশ, ষাট, সত্তর বছর পরে, এই প্রশ্নটা প্রশ্ন হিসেবেই রয়ে গেল।
কতগুলি মৌলিক কথায় এবার আসা যাক। আমাদের যিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি – সাংসদ বা বিধায়ক – তার ভাবনা চিন্তা ও ক্রিয়াকলাপকে আমরা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি? অন্য ভাবে বললে, নির্বাচিত হবার পর তিনি কতটা ধার ধারেন আমাদের সমষ্টিগত আকাঙ্খা, ভালো থাকার বিষয় গুলির? এবং যদি তিনি ধার না ধারেন তবে পরবর্তী নির্বাচনে তার আবার প্রার্থী হ‌ওয়া এবং নির্বাচিত হ‌ওয়া আটকাতে আমরা কতটা সক্ষম আমাদের বর্তমান ব্যাবস্থায়? প্রতিটা নাগরিক নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে তবেই এর সমাধানের উপায় হতে পারে। নির্বাচিত প্রতিনিধি দৌড়াত্যপুর্ন আচরনে নিজের এলাকার মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রাখছে, যাকে যখন খুশি শাসাচ্ছে, সাধারণ অসহায় মানুষের জায়গা জমি জবর দখল করে নিচ্ছে, থানা পুলিশ প্রশাসনের স্বাধীন কাজে অবৈধ হস্তক্ষেপ করে মানুষের বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ করে রাখছে – এই বর্ণনা গুলো দেশের বহু অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবনে অপরিচিত হবেনা।
বাস্তবিক অর্থেই আমাদের গনতন্ত্রে আমরা সাধারণ নাগরিকরা কিছুই নিয়ন্ত্রণ করিনা। সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে কিছু ব্যাক্তি বা পরিবার, তথাকথিত ভাবে যাদের বলা হয় হাইকমান্ড – রাজ্য স্তরে বা কেন্দ্রীয় স্তরে। ভারতের সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা নিজেদের জন্য সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে ব্যার্থ হয়েছি। গণতন্ত্রের সঠিক দিশাই সাধারণ মানুষ এখনো খুঁজে পায়নি। শুধু ভোট দিতে পারার মধ্যে গণতন্ত্রের একটা ভ্রম তৈরি হয়ে গেছে। আমরা এর মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে আছি।
কি ভাবে একজন রাজনীতিক একটা দলের হয়ে নির্বাচনে দাঁড়ায়? তার জন্য চাই শুধু মাত্র তার দলের সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদন। যে নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে সে দাঁড়াতে চায় সেই কেন্দ্রে দলের যে শত সহস্র কর্মী ও সদস্যরা রয়েছেন তারা কাকে তাদের দল থেকে ঐ কেন্দ্রের প্রার্থী করতে চায়, সেই চাওয়ার কিছুমাত্র মূল্য নেই। অথচ আমেরিকা ও অন্যান্য উন্নত গণতন্ত্রে এটাই সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক শক্তির মূল আধার। আমাদের দেশে দলীয় কর্মীরা হলো অনেকটা ভাড়াটে সৈন্যের মতো। তাদের একমাত্র কর্ম হলো হাইকমান্ড থেকে তাদের উপর যাকে প্রার্থী করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিনা প্রশ্নে তাকে যে কোনো প্রকারে জিতিয়ে আনা। তার জন্য হিংসার আশ্রয় নেওয়া, মানুষকে ভয় দেখানো, ভোট দিতে না দেওয়া, বুথ দখল করা, ঘুষ দেওয়া – যা করতে হয় হোক। এবং দলীয় কর্মীরাও তা-ই করে। তাই নির্বাচিত প্রার্থীর সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খার ধার ধারার প্রয়োজন থাকেনা। নির্বাচিত হয়েই তার প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় তার কেন্দ্রে নিজের বাহুবল কায়েম রাখা, যেন অন্য কেউ মাথা তুলতে না পারে। এবং অর্দ্ধমৃত গনতন্ত্রে এদের রাজত্ব সহজে কায়েম থাকে, কারণ মাথা তোলার মানুষ কম থাকে। সবাই কোনো ভাবে নিজের জন্য বাঁচে। আর যেহেতু সব দল‌ই এই ধারাতেই প্রার্থী নির্বাচন করে – তাই এদের‌ই কেউ না কেউ নির্বাচিত হবে, সাধারণ মানুষ প্রার্থীদের যত‌ই অপছন্দ করুক। এটাই সেই রহস্য যার মাধ্যমে আতিক আহমেদ, বৃজভুষনরা দশকের পর দশক সাংসদ-বিধায়ক নির্বাচনে মনোনয়ন পায়। মাফিয়া কারবারের ভান্ডার থেকে বহু কোটি টাকার বিনিময়ে কোনো না কোনো দলের টিকিট কিনে নেয়, তার পর বাহুবল, পিস্তল, বন্দুকের সাহায্যে নির্বাচন জিতে নেওয়া এদেশে কঠিন হয়না। এর মধ্যে কিছুমাত্র গনতন্ত্র নেই, মানুষের নাগরিক অধিকার ও সম্মানের ছিটে ফোটাও নেই – নির্বীর্য্য জীবন যাপন ছাড়া।
সব প্রার্থীকে টাকা দিয়ে নির্বাচনে দলের টিকিট কিনতে হয়না। যাদের টাকা দিয়ে দলের টিকিট কিনতে হয়না, তাদের দিতে হয় শির্ষ নেতার পায়ে নিঃশর্ত সম্পুর্ণ আনুগত্য। জিম্মায় রাখতে হয় সাংসদীয় ও বিধায়কীয় স্বাধীন চিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার। বাস্তবিক পক্ষে এরা সবাই এই ভাবে বাঁধা পড়েন ব্যাক্তিগত ভাবে ঐসব শির্ষ নেতা বা পরিবারের দাসত্বে। এই দাসত্ব বজায় রেখে ও সম্পুর্ন আনুগত্যের প্রমাণ দিয়েই সুনিশ্চিত করতে হয় পরবর্তি নির্বাচনে টিকিট পাওয়া। এই প্রকৃয়ায় গত পঁচাত্তর বছরে কেন্দ্রীয় স্তরে ও রাজ্যে রাজ্যে সমস্ত রাজনৈতিক ক্ষমতা চলে গেছে কিছু ব্যাক্তি ও পরিবারের হাতে – সেটা সরকার পক্ষেই হোক, বা বিরোধী পক্ষে। সরকারের সর্বোচ্চ পদ গুলো আপনা থেকেই হয়ে গেছে বংশানুক্রমিক অধিকারের ক্ষেত্র। সাধারণ মানুষ,  যাদের জন্য গণতন্ত্র, তারা শুধু অসহায় নিরব দর্শক। তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এই কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ প্রকৃয়ায়। তাদের দ্বারা নির্বাচিত বিধায়ক অবৈধ আর্থিক লাভ বা পদের লোভে অনায়াসে দল পরিবর্তন করে, কারন মানুষের পরোয়া তাকে করতে হয়না। তাই ভারতবর্ষে যা চলছে তা গনতন্ত্র নয়। শুধু বাইরে থেকে দেখতে এটাকে গনতন্ত্র ভ্রম হয়। বিশ্ববাসীর কাছে এই ফাঁকিটা ধরা পরেনি তা নয়। সবাই সব জানে ও বুঝে। ফাঁকিতে পরে আছি শুধু আমরা, যারা এদেশে নিয়ম করে ভোট দিতে যাই, আঙ্গুলে কালো দাগ লাগিয়ে একটা নির্বোধের তৃপ্তি লাভ করি। নাগরিক অধিকার প্রয়োগের গর্ব প্রকাশ করি।
আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটা বড় রাজনৈতিক দলের একটা করে সংবিধান আছে। কিন্তু সংবিধান গুলোতে যা-ই লেখা থাকুক না কেন, ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে তাদের শির্ষ নেতারা ও তাদের পরিবার ঐ সংবিধানের উর্দ্ধে। তাদের ইচ্ছা ও কথাই দলের আসল সংবিধান। তাই দলের নেতৃত্ব কখনো হস্তান্তর হয়না, বংশানুক্রম ছাড়া।
তাই এই বিষয়ে প্রয়োজন বহু মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা। প্রয়োজন রাজনৈতিক দলীয় ব্যাবস্থায় আমুল পরিবর্তন যেখানে মূল রাজনৈতিক ক্ষমতা নেমে আসবে সাধারণ মানুষের হাতে। প্রতিটা নির্বাচন কেন্দ্রে দলীয় কর্মী ও সদস্যরা প্রাথমিক ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচন করবে কে তাদের কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থী হবে। কোনো ভাবেই উপর থেকে কেউ ঠিক করে দেবেনা কে কোন আসনে নির্বাচনের প্রার্থী হবে। এভাবে নির্বাচিত সাংসদ ও বিধায়কের স্বাধীন ভাবনার ও মত দেবার অধিকার বজায় থাকবে। তারা শির্ষ নেতার বাঁধা গোলামে পরিনত না হয়ে সরাসরি তার নির্বাচনী কেন্দ্রের ভোটার ও প্রথমত নিজের দলের কর্মী ও সদস্যদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। লেঠেল দিয়ে নিজের কেন্দ্রে ভয়ের শাসন কায়েম করা সম্ভব হবে না। ভদ্র, সভ্য ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য থাকবে, কারন এই সাধারণ মানুষেরাই ঠিক করবেন তাকে আবার প্রার্থী করা হবে কিনা।
এই ভাবে এটাও সুনিশ্চিত হবে যে, কোনো এক ব্যাক্তি বা এক বিশেষ পরিবারের সদস্যরা বংশানুক্রমিক ভাবে দলের হয়ে চিরস্থায়ী ভাবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান পদের অধিকারী থাকবেনা। থাকবে সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতা। এই সব বিষয়ে রাজ্যে ও দেশের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হোক, এটার খুব প্রয়োজন। স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পর এখন নিশ্চ‌ই সময় হয়েছে ভারতের গনতন্ত্রের পরবর্তী ধাপে উত্তরন ঘটানোর। এই দায়িত্ব নিতে হবে দেশের শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকদের। এটাই হবে দেশের পরবর্তী ধাপের স্বাধীনতা সংগ্রাম যা বর্তমানের এই পরিবার নিয়ন্ত্রিত অসম্পূর্ণ গনতন্ত্রের অচলায়তন ভেঙে স্বাধীনতার সুফল ও প্রকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার দেশের সুবিধাভোগী এলিটদের কবল থেকে মুক্ত করে সর্বসাধারণের জীবনে পৌঁছে দেবে।
একটা মূল্যবান কথা হলো – The corner stone for founding a vibrant and lasting democracy is to ensure constant renewability of leadership.
What's Your Reaction?
Excited
0
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0
View Comments (0)

Leave a Reply

Your email address will not be published.


Scroll To Top