Now Reading
Free Soul’s Stay

Free Soul’s Stay

Avatar photo
we the nature lovers
+2
View Gallery

প্রচলিত আছে যে বাঙালি নাকি ব্যবসা করতে পারে না। কিন্তু Free Soul’s Stay নিয়ে এই প্রবন্ধটা পড়ার পর আপনার ধারণা পাল্টাতে বাধ্য।

লোকে বলে বাঙালি ব্যবসা করতে পারে না, কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য এই ধারণা ঠিক, কারণ অধিকাংশ বাঙালি ব্যবসার পরিবর্তে দশটা পাঁচটার চাকরিজীবন কে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু খেলাধুলা হোক বা পড়াশোনা বা রাজনীতি এইসবের মতোই বাঙালি যখন ব্যবসা করে, সেটাকে সে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এই ধারণা অবশ্য আমাদের একান্তই ব্যক্তিগত. কিন্তু যাদেরকে দেখে এই ধারণা হয়েছে আজ শোনাবো তাদের গল্প । আজ থেকে প্রায় বছর পাঁচেক আগে কলকাতার সল্টলেক থেকে দুটি ২৪-২৫ বছরের ছেলে মেয়ে Pratik আর Tania পাহাড়ে এসেছিল একরাশ স্বপ্ন নিয়ে এবং বানিয়েছিল তাদের পাহাড়ে থাকার ঠিকানা free soul’s stay দার্জিলিং জেলার তামাংগাও গ্রামে । বিগত পাঁচ বছরে Covid এবং আরো অন্যান্য ঝড়ঝাপটা সামলে শেষমেষ তারা পাহাড়ের বাসিন্দা হিসেবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে । মিশে গেছে সেখানকার মানুষদের সাথে, শিখে নিয়েছে তাদের ভাষা এবং অসম্ভব সুস্বাদু কিছু লোকাল tribal cuisine, যা টেস্ট করতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে ওদের বর্তমান আস্তানা আপার lingsebong গ্রামের free soul’s stay তে।

Homestay
Free Soul’s Stay দার্জিলিং জেলার তামাংগাও গ্রামে

আল্পসের বাড়িগুলির মত করে বানানো দুটি কাঠের দোতলা বাড়ি বা ডুপ্লে নিয়ে তৈরি এই হোমস্টে টির যাত্রা শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর মাস থেকে । আমরা গিয়েছিলাম জানুয়ারি মাসে তিন রাতের জন্য. ওদের আতিথেয়তা এবং জায়গাটি তে ঘোরার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানার আগে আসুন দেখে নিই এখানে পৌঁছবেন কিভাবে।

কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যে কোন রাতের ট্রেন ধরে পরদিন সকালে পৌঁছে যান এনজিপি স্টেশন বা শিলিগুড়ি জংশনে,সেখান থেকে যদি ডাইরেক্ট গাড়িতে যেতে চান তাহলে খরচা অনেকটাই বেশি পড়বে, , বর্তমান সময় যা সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।আর আমাদের মত শাটল গাড়িতে যেতে চাইলে,অটো বা টোটো ধরে চলে আসুন দার্জিলিং মোড়ের সরকার গ্যারেজে । একটা কথা জানিয়ে রাখি যে ট্রেন থেকে স্টেশনে নেমেই আশেপাশের কোন দোকান থেকে অবশ্যই কিছু জলখাবার খেয়ে নেবেন, কারণ অনেকটা রাস্তা যেতে হবে আর মাঝে গাড়ি মাত্র একবারই থামবে লাঞ্চের জন্য. দার্জিলিং মোড় থেকে এই গাড়ি ছাড়ে সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে এবং জনপ্রতি ভাড়া ৬০০ টাকা করে. এই গাড়িতে মোট জার্নি টাইম পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা আর পাহাড়ে ওঠার ঠিক আগে আপার দুধিয়াতে প্রায় আধঘন্টা থেকে ৪০ মিনিট এই গাড়ি দাঁড়ায় লাঞ্চ ব্রেক হিসেবে, সুতরাং বুঝতেই পারছেন পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় সন্ধ্যে হয়ে যাবে। এই গাড়িতে আসতে চাইলে প্রতীকের থেকে ড্রাইভারের নাম্বার নিয়ে দু তিন দিন আগেই কথা বলে সিট বুক করে রাখতে হবে. অবশ্য দুপাশের পাহাড়,পাইনের জঙ্গল এবং চা বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতে মিরিখ, মানেভঞ্জন, ধোত্রে পেরিয়ে কখন যে পৌঁছে যাবেন upper lingsebong এর zero point এ ….তা টেরই পাবেন না । জায়গাটিকে zero point বলা হয় কারণ এর পরে আর সাধারণ গাড়ি যেতে পারে না, বাকি পথটুকু যেতে হবে হেঁটে পাহাড়ের চড়াই পেরিয়ে পাকদন্ডী বেয়ে । সময় লাগবে পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট– অবশ্য যারা লট বহর নিয়ে এতটা ধকল সহ্য করতে পারবেন না, তারা দুটি কাজ করতে পারেন, প্রতীককে আগে থেকে জানিয়ে দিলে ও four wheel ড্রাইভের গাড়ির বন্দোবস্ত করে দেবে, যার জন্য অবশ্যই আলাদা খরচ লাগবে। আর পিঠে মালপত্র না নিয়ে হেঁটে উঠতে চাইলে porter er ব্যবস্থাও করে দেবে ওরা।

Looking at the sky

এবার চলে আসি এই আপার lingsebong জায়গাটি কেমন– সেই প্রসঙ্গে. যদিও কেমনের আগে যে প্রশ্নটি চলে আসে সেটি হল কোথায়… এই জায়গাটি অবস্থিত Singalila National Park এর ঠিক মাঝখানে অর্থাৎ চারিদিক পাহাড় এবং জঙ্গল দিয়ে ঘেরা চার পাশটা ঘুরে দেখার আগে নিচের ভিডিও লিংক এ ক্লিক করে দেখে নিন আমাদের কোথায় থাকতে দিয়েছিল…… আল্পসের বাড়ির অনুকরণে বানানো দোতলা কাঠের বাড়িদুটির মধ্যে একটি বরাদ্দ ছিল আমাদের চারজনের জন্য. যদিও এক একটি কটেজে ম্যাক্সিমাম 7 জনের accomodation সম্ভব…

bulbs lined up at the stay

Free Soul’s Stay তে  থাকতে আমাদের পড়েছিল ১৩০০ টাকা করে per day per head থাকা-খাওয়া মিলিয়ে. যদিও এই রেট কিন্তু minimum 4 jon গেলে তবেই applicable, এবং অবশ্যই সময় আর বাজারদরের সাথে পরিবর্তনীয়। আর এখানকার খাবারদাবারের ব্যাপারে কোন কথা হবে না, আমরা তিন রাত চার দিন ছিলাম কিন্তু ওরা চার বেলার খাবারেও কোন মেনু রিপিট করেনি।খাইয়েছে অসাধারণ সব স্থানীয় ট্রাইবাল খাবার, অবশ্য কেউ যদি সাধারণ বাঙালি খাবারেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান, তাহলে সেই ব্যবস্থাও আছে, তবে এটুকু বলতে পারি ওদের হাতের যে কোন রান্নাই অসাধারণ আর এই সমস্ত খাবার দাবার ওরা রান্না করে কটেজের পাশেই একটি kichen cum dining room এ, যে জায়গাটি ওই তিন দিন পরিণত হয়েছিল আমাদের আড্ডাখানায় আর এর ঠিক ওপরেই হচ্ছে ওদের থাকার ঘর. এছাড়া কটেজের পাশে terrace এর মতো light bulb দিয়ে সজ্জিত জায়গাটিতেও bonfire এবংbbq chicken er ব্যবস্থা করা যেতে পারে, অবশ্যই অতিরিক্ত খরচে, কারণ এগুলি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত নয়. এছাড়া প্রবল ঠান্ডা লাগলে অতিরিক্ত খরচে ওরা ঘন্টা প্রতি হিসেবে room heater এর ব্যবস্থাও করে দেবে কিন্তু কাঠের বাড়ি বলে সেটি বেশি সময় ধরে না চালানোই ভালো . অবশ্য যারা আমাদের মত ঠান্ডা উপভোগ করতে চান তাদের বেশ ভালই লাগবে, January মাসে রাতের বেলায় আমরা 2 -3 degree temperature পেয়েছিলাম, এমনকি বরফ ও দেখতে পাওয়ার ভাগ্য হয়তো হতো কিন্তু dry weather এর জন্য সেই সৌভাগ্য হলো না।

the view

See Also

এবার চলে আসি  Free Soul’s Stay  তে এলে কোথায় কোথায় যাবেন. এখানে এলে তিনটে রাত থাকা কিন্তু অবশ্যই recommended. কারণ প্রথম দিন পৌঁছতে পৌছাতেই সন্ধ্যে হয়ে যাবে, আর ফেরার দিন বেলা বারোটার সময় জিরো পয়েন্ট থেকে ফেরার shuttle ছাড়বে। তাই তিন রাত থাকলে মাঝি পাবেন দুটি পুরো দিন, যার প্রথমটিতে local guide নিয়ে চলে যান স্থানীয় একটি ঝর্ণা দেখতে। trek করে যেতে আসতে এবং ওখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে সময় লাগবে ঘন্টা তিনেক মত, অর্থাৎ জলখাবার খেয়ে বেরোলে, লাঞ্চের সময় ফিরে আসতে পারবেন. ঐদিন আর বেশি হাঁটাহাঁটি না করে একটু রেস্ট নিয়ে নিন কারণ পরের দিন আছে সারাদিনের black forest trek. একটু early ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়লে সন্ধ্যে সাড়ে পাঁচটা ছটার মধ্যে ফিরে আসতে পারবেন, তবে হাঁটা কিন্তু অনেকটাই. এখানে বড় বড় গাছের ঘন জঙ্গল আছে বলে সূর্যের আলো প্রায় ঢুকতেই পারে না, তাই একে ব্ল্যাক forest বলা হয়।

the walk in the forest

পাহাড়ে গিয়ে যারা শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করেন বা প্রকৃতির মাঝে কিছুদিন সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য এই জায়গাটি স্বর্গ বলা চলে। কাঠের বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে চা খেতে খেতে বা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কখন যে তিন-চারটে দিন কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না। সমমনস্ক হলে পেয়ে যেতে পারেন prateek ar taniar moto দুজন ভালো বন্ধু,…. ভালো লাগবে এখানকার মানুষের আন্তরিক ব্যবহার আর খুদেদের দৌরাত্ম। কলকাতা বা শিলিগুড়ি থেকে ওদের জন্য চকলেট নিয়ে যেতে কিন্তু ভুলবেন না, তাহলে মিস করবেন এই গোলাপি গালের হাসি. এখানে যাবার সমস্ত ডিটেইলস নিচে ডেসক্রিপশন বক্সে দেওয়া রইল. ভিডিও …

What's Your Reaction?
Excited
1
Happy
0
In Love
0
Not Sure
0
Silly
0
View Comments (0)

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Scroll To Top