পয়েলা বৈশাখ @ ভুরিভোজ



A devoted foodie with keen interest in wild life, music,…
পয়লা বৈশাখ মানেই ভুরিভোজ, পয়লা বৈশাখ মানেই খাওয়া দাওয়া। তবে এবার খাওয়া দাওয়া হবে ভার্চুয়ালি, আর রেসিপিটা এলো এক রহস্যময়ী মহিলার থেকে, কে এই রহস্যময় নারী?
ইয়ে মানে, আজ তো ১৪ই এপ্রিল, মানে কাল পয়েলা বৈশাখ , তাই ভুরিভোজের আয়োজন করতে বাজার গেলাম। গিয়ে বাঙালির রসবোধের এক দারুণ নিদর্শন দেখতে পাই । বাজার ঢুকতেই দেখি মজুমদার বাবু হনহনিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন আর মাছওয়ালা পল্টু তাকে ডাকছে “ওরে কাকা ঘুরে তাকা।”মজুমদার বাবু ও সাথে সাথে বলে উঠলেন “তাকাবো কিরে, তোর মাছের ডেথ সার্টিফিকেট আর গান্ধীর ডেথ সার্টিফিকেট তো একই দিনে লেখা হয়েছিল।”
আমি মনে মনে ভাবলাম কয়েকদিন আগে সিড (Sid) যখন এসেছিল তখন তাকে এরকম মজার ঘটনাগুলো বলছিলাম, তারপরই মনে হল সিড আরো কয়েকদিন থাকলে পারতো তাহলে ওকে নববর্ষে ভালো ভালো খাবার খাওয়াতে পারতাম। এইসব কথা ভাবতে ভাবতে এগিয়ে যাচ্ছি ঠিক তখনই ফোনটা বেজে উঠলো। দেখি সিড ফোন করেছে এ যেন লালমোহন বাবুর ভাষায় ‘টেলিপ্যাথি ঠাকুর দাদা’।
“কিরে কি করছিস?”
“বাজারে এসেছি, আর তোর কথাই ভাবছিলাম ঠিক তখনই তোর ফোন।”
“একেই বোধহয় টেলিপ্যাথি বলে তাই না।”
“আমিও তাই ভাবছিলাম, তুই আরো কয়েকদিন কলকাতায় থাকলে পারতি। ভালো ভালো খাবার খাওয়া যেত আর পয়েলা বৈশাখ পালন করতাম। ।”
“আরে সেই জন্যই তো তোকে ফোন করা” ।
“মানে? তুই আবার আসছিস?”
“না না আমি আসছি না, তবে তোর কাছে দুটো রেসিপি আসছে।”
“মানে?”
“মানে এই যে আমি তোকে দুটো রেসিপি পাঠাচ্ছি । তুই কলকাতায় বসে ওটা বানা, আর আমি দিল্লিতে বসে সেম রেসিপি টা বানাই, আর তারপরে ভার্চুয়ালি মিট করে দুজনে একসাথে বসে পয়েলা বৈশাখ পালন হবে।”
“বাহ এতো ভালোই হয় এই আইডিয়া তো মন্দ নয়। তা কি রেসিপি ?”
“এক অসাধারণ মহিলা, খুবই সাধারন জিনিস দিয়ে এক অসাধারণ রেসিপি পাঠিয়েছে।”
“কে? কোন মহিলা? আমি চিনি?”
“খালি তুই না ওনাকে চেনে।”
“কে? কার কথা বলছিস?”
“ধীরে বন্ধু, ধীরে, সবুর কর তবে তো মেওয়া ফলবে।”
এই বলে রেসিপিটা পাঠালো আমায় সিড ।
পয়েলা বৈশাখ SPECIAL RECIPE
আম সরষে বাটা ভেটকি
উপকরণ
ভেটকি ৫০০ গ্রাম ( কাঁটা সুদ্ধ)
কালো সরষে আর অল্প পোস্ত কাঁচা লংকা দিয়ে বাটা, ৫ চামচ।
কাঁচা আম, একটা কুরানো ৩ -৪ চামচ
দই ১ চামচ
নুন, হলুদ
কাঁচা লংকা
মাছে নুন হলুদ দিয়ে ভেজে নিতে হবে। যে সরষে বাটা হয়েছে তাতে দই, নুন হলুদ মিশিয়ে মাছ ভাজা তেলেই মসলা ছেড়ে অল্প জল দিয়ে ২ মিনিট ভেজে নিয়ে দিতে হবে আম বাটা দিয়ে, ১ কাপ গরম জল দিয়ে ফুটিয়ে ভাজা মাছ দিয়ে ঢেকে গা মাখা হলে কয়েকটি কাঁচা লংকা।
চিংড়ি র জলবড়া
উপকরণ
চিংড়ি মাছ ৩৫০ গ্রাম
আদা বাটা
লংকা বাটা
নুন, হলুদ
গোটা গরম মশলা
তেজপাতা
পেঁয়াজ বাটা ৩-৪ চামচ
দই ২-৩ চামচ
জিরে গুড়ো ১ চামচ
কাস্মীরি লাল লংকা ১ চামচ
নারকেল দুধ ১ কাপ
চিনি
ঘি
গরম মশলা গুঁড়ো ১ চামচ
চিংড়ি মাথা ছাড়িয়ে, খোসা ছাড়া, আদা বাটা, লংকা বাটা দিয়ে মিক্সারে পেস্ট করে নিতে হবে। এতে মেশাতে হবে নুন আর একটু হলুদ। এই পেস্ট টা ৩০ মিনিট ফ্রিজে রাখতে হবে।
কড়াইতে তেল গরম করে তাতে গোটা গরম মশলা, তেজপাতা দিয়ে, আদা বাটা, লংকা বাটা, পেঁয়াজ বাটা সব ভেজে, ফেটানো দই, জিরে গুড়ো, লংকা গুড়ো নুন, চিনি, হলুদ দিয়ে তেল ভাসা অবধি কষতে হবে। দরকার হলে ১-২ চামচ জল দিতে হবে। তারপর সব ভাজা হলে নারকেল দুধ। আর কয়েকটি লংকা। নারকেল দুধ ফুটতে শুরু করলে বাটা চিংড়ি হাতে গোল করে ওই ঝোলে ছাড়তে হবে, গ্যাস কম করে ফুটতে দিতে হবে, চিংড়ি র বড়া সেদ্ধ হতে মিনিট ৫-৬ সময় লাগে, তারপর ঝোল ঘন হয়ে এলে ঘি আর গরম মশলা গুড়ো দিয়ে নামাতে হবে।
“দেখে তো মনে হচ্ছে ভালোই হবে। তো কে এই মহিলা এবার বল।”
না আজ তবে এটুকুই থাক সে গল্প পরের বার। এবার বোধহয় ওনার সাথে দেখা করার পালা..
2 B continued…..
What's Your Reaction?

A devoted foodie with keen interest in wild life, music, cinema and travel Somashis has evolved over time . Being an enthusiastic reader he has recently started making occasional contribution to write-ups.