দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস
Raj Kumar Mukherjee - sexagenarian. A father, a husband and…
আজ দেশবন্ধু দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস এর মহাপ্রয়াণ দিবস। এই উপলক্ষে ইস্ট ইন্ডিয়া স্টোরির তরফ থেকে আমাদের একটি ছোট্ট শ্রদ্ধার্ঘ্য। কলমে: রাজকুমার মুখার্জি
“দেশকে ভালোবাসা যদি অপরাধ হইয়া থাকে, তবে আমি অপরাধী” — এহেন উক্তি যাঁর, তিনি ১৬ই জুন ১৯৫৫ সালে, মাত্র ৫৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস । দেশবন্ধুর অকাল প্রয়াণের খবর পেয়ে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন “দেশবন্ধু অকালে মারা না গেলে দেশে নতুন অবস্থার সৃষ্টি হতো।” দেশবন্ধুর মৃত্যুর খবর পেয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন “এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ মরণে তাহাই তুমি করে গেলে দান।”
১৯০৮ সালে শ্রী অরবিন্দ ঘোষের ‘আলিপুর বোমা মামলা’ চিত্তরঞ্জন দাস কে তাঁর পেশাগত মঞ্চের পাদপ্রদীপের সামনে নিয়ে আসে। এত চমৎকার করে কেস সাজিয়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত শ্রী অরবিন্দ ঘোষ কে বেকসুর খালাস করে দিতে বাধ্য হয়। দেওয়ানী ও ফৌজদারী, উভয় আইনেই দক্ষ আইনজীবী ছিলেন দেশবন্ধু। তৎকালীন যুগে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন এবং অকাতরে তা বিলিয়ে দিয়েছেন অভাবি ও আর্তদের সেবায়।
১৮৯০ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক এবং পরবর্তী সময় ১৮৯৪ সালে ইংল্যান্ডের ইনার কলেজ থেকে আইনের স্নাতক হন। সে বছর কলকাতায় ফিরে এসে কলকাতা হাইকোর্টে ব্যারিস্টার হিসেবে যোগদান করেন।
বিশ শতকের প্রথমদিকে রাজনীতিতে যোগদান করেন। অনুশীলন সমিতির মতন বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের সময়, গান্ধীজীর ডাকে সাড়া দিয়ে, পেশাজগতের সাফল্যের শিখরে থাকা সত্ত্বেও, এক কথায় আইনি পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান করেন। তখন তার মাসিক উপার্জন ঈর্ষণীয়।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু , হোসেন সোহরাওয়ার্দী, ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়, শরৎচন্দ্র বসু, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত এঁরা ছিলেন দেশবন্ধুর উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক শিষ্য। দেশবন্ধু প্রায়শই বলতেন “দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য যদি আমাকে প্রাণপাত পরিশ্রম করতে হয়, আমি নির্দ্বিধায় তা করব।” হিন্দু, মুসলমান সকলের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা; দুই সম্প্রদায়ের প্রতি উদারতা, দেশের প্রতি ভালোবাসা — এ সকল কারণে তাঁকে জনগণ ‘দেশবন্ধু’ খেতাবে ভূষিত করেন।
কলকাতা কর্পোরেশনের প্রথম মেয়রের নাম করতে হলে দেশবন্ধুর নাম করতে হয়। ১৯২৪ সালের মেয়রের চেয়ার অলংকৃত করেন। ১৯২৩ ও ১৯২৪ সালে লাহোর ও কলকাতায় শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।
দেশবন্ধুর কর্মের তালিকা দিতে বসলে একটা গোটা বই লেখা হয়ে যাবে। হাতেগোনা কয়েকটি কর্মকাণ্ডের নমুনা মাত্র পেশ করার চেষ্টা করেছি। ১৯২৫ সালের ১৬ই জুন এই মহামানব শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শুধু বাংলা কেন সমগ্র ভারতের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন ঘটলো।
শেষ করবো দেশবন্ধুর এক বাণী দিয়ে:
” বাংলা আপনার আত্মবিকাশ আপনি করিবে, আপনার গান আপনি গাহিবে, আপন সাধন দারা সিদ্ধিলাভ করিবে ও আপন জগতের সম্মুখে দাঁড়াইবে।”
What's Your Reaction?
Raj Kumar Mukherjee - sexagenarian. A father, a husband and a son, who has finally let go of excelsheets and PowerPoints and picked up a pen instead. A child at heart, he reminisces his childhood days and wishes that the world was a better place for all of us. An avid reader and storyteller at heart, he is spending his retirement by reading books, experimental cooking (mostly failures!) and writing.