দেবজ্যোতি মিশ্র এবার বাংলা ক্যালেন্ডারে


এবার নববর্ষর ক্যালেন্ডার প্রকাশ পেতে চলেছে শোভাবাজার রাজবাড়িতে। বিশেষত্ব হলো দেবজ্যোতি মিশ্রের আঁকা বেশ কিছু ছবি এই ক্যালেন্ডারে দেখা যাবে, গল্পটি পড়ে দেখুন বিস্তারিত জানার জন্য।
সেদিন সকালে রমেনের হঠাৎ গান শোনার ইচ্ছে হলো। অটোগ্রাফ সিনেমাতে দেবজ্যোতি মিশ্র রচিত সেই বিখ্যাত গানটি ‘চল রাস্তায় সাজে ট্রাম লাইন‘ সে ল্যাপটপে চালালো । সত্যিই এই গানটা যে কতজনের নস্টালজিয়া সেটা বলাই বাহুল্য। এরই মধ্যে বৃষ্টি মানে রমেনের বেটার হাফ চা নিয়ে এসে বলল “হ্যাঁগো এবছর একটাও ক্যালেন্ডার আনলে না যে?”
“ক্যালেন্ডার? ওতে কি হবে ? মোবাইলেই তো সব আছে?”
“আরে বাংলা ক্যালেন্ডারের কথা বলছি, মোবাইলে তো ইংলিশ ক্যালেন্ডার আছে।”
“ও আচ্ছা, তাই বল , দেখতে দেখতে নতুন বছর এসে গেল , এটা কত সাল হবে এবার?”
“১৪৩০”
“১৪৩০…..আচ্ছা দেখছি আজ অফিসপাড়া থেকে একটা নিয়ে আসবো। দাঁড়াও দাঁড়াও সেদিন কি যেন একটা শুনছিলাম….. শোভাবাজারের রাজবাড়ি….. ক্যালেন্ডার ঠিক মনে পড়ছে না। আজ অফিস গিয়ে সবজান্তা সজলদাকে জিজ্ঞেস করছি। ”
সেদিন অফিস পৌঁছে কাজের চাপে রমেন ক্যালেন্ডারের কথাটা ভুলেই গেছিল । ভাগ্যিস বিকেলবেলা সজলদার সাথে অফিস ক্যান্টিনে দেখা।
“আরে সজলদা ভাগ্যিস তোমার সাথে দেখা হল না হলে ভুলেই যেতাম ।”
“কি হয়েছে?”
“আর বোলো না , তোমার বৌমা ফরমাইস করেছে বাংলা ক্যালেন্ডার চাই। তুমি শোভারবাজার রাজবাড়ি ক্যালেন্ডার নিয়ে কি একটা বলছিলে না?”
“হ্যাঁ আগামী ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৫টায় শোভাবাজার রাজবাড়ির নাটমন্দিরে প্রকাশ হবে এক বিশেষ ক্যালেন্ডার ‘গানের ভিতর দিয়ে’।”
“বিশেষ ক্যালেন্ডার বলছ কেন?”
” ক্যালেন্ডারের সব পাতায় থাকবে দেবজ্যোতি মিশ্র আকা ছবি।”
“দেবজ্যোতি মিশ্র মানে সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র?”
“হুম তাঁর কথাই বলছি, কিন্তু এটা জেনে রাখ দেবজ্যোতি মিশ্র একাধারে যন্ত্রী, সুরকার, সঙ্গীত আয়োজক, আবহসঙ্গীত পরিচালক, গায়ক অন্যদিকে একজন দক্ষ চিত্রশিল্পী ও বটে। তাঁর তুলির টানে কখনো মুক্ত হয়েছে সলিল চৌধুরী, কখনো সত্যজিৎ কখনো যন্ত্রসংগীত শিল্পীরা, নৃত্যশিল্পী, পাশ্চাত্য যন্ত্রসংগীত শিল্পীর দল, কখনো বা বাংলার মাটির বাউল। ”
“আরেব্বাস এটা তো দারুন ইনফরমেশন দিলে?”
“কেন তুই জানতিস না? তবে শুনে রাখ এ শহরে আগেও চিত্রশিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র প্রদর্শনী হয়েছে, কিন্তু এবার প্রথমবার তার আঁকা ছবি বাংলা নববর্ষ ক্যালেন্ডারে প্রকাশ পেতে চলেছে।”
“দারুন। কারা organize করছে জানো?”
“সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন”
“এদের কথা শুনেছিলাম বটে, এরাতো তারাই না যাঁরা সারাবছর নানা সচেতনতা মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন?”
“হ্যাঁ ঠিকই বলেছিস। তোকে আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি, পয়লা বৈশাখে প্রকাশ পাচ্ছে দেবজ্যোতি মিশ্র সুরারোপিত ছবি ‘শেষ পাতা।’ তবে শুধু শেষ পাতায় নয়, ছয় পাতার এই দেওয়াল ক্যালেন্ডারে থাকছে পাতায়, পাতায় দেবজ্যোতি মিশ্রের আঁকা ছবি ।”
“দারুন তো, তুমি যাচ্ছ?”
“আমি তো যাবোই আর যাতে তুইও যাস তার জন্য তোকে আরো কয়েকটা কথা বলি। সঙ্গীত জীবনের অবদানের জন্য থাকছে বিশেষ সম্মান দেবজ্যোতি মিশ্রের জন্য। এই উদ্যোগের নেপথ্যে মূল কারিগর সংস্থার সম্পাদক সঞ্জীব আচার্য। সুর থেরাপির কাজ করে। গানের মধ্যে দিয়ে জীবনের উদযাপন সব সময় ভালো লাগার। তাই একজন সঙ্গীত শিল্পীর আঁকা ছবির মধ্য দিয়ে জীবনের নানা মুহূর্তের গল্প বলা হলো এই ক্যালেন্ডারে। পরে অনুষ্ঠিত হবে বৈশাখি সন্ধ্যা গানে ইন্দ্রানী সেন, শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, উপালি চট্টোপাধ্যায়,স্বপন বসু প্রমুখ।”
“তুমি কখন যাচ্ছ বল আমিও যাব তোমার বৌমাকে নিয়ে।”
রমেনরা তো যাচ্ছে আর আপনি??