খুঁটি পূজো @ ঠাকুরপুকুর এস বি পার্ক
Raj Kumar Mukherjee - sexagenarian. A father, a husband and…
দুর্গাপুজো মানেই হইচই দুর্গাপুজো মানেই খাওয়া দাওয়া তবে আমাদের এই পুজোর সূত্রপাত হয় খুঁটি পুজো দিয়ে। ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক আয়োজিত খুঁটি পুজো এবং এই পুজোর বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছেন রাজকুমার মুখার্জি এই গল্পে ।
খুঁটি পুজো মানে মা দুর্গার আগমনের দিন গোনা শুরু। যদিও পুরানে খুঁটি পুজোর ওপর বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না। তবুও খুঁটি পুজোর দিনকে যোগমায়ার আবির্ভাবের দিন হিসেবে ধরা হয়। মূলত খুঁটি পুজো হয় রথযাত্রার দিন। প্রতিমার কারিগররা মনে করেন ওই দিনটি যোগমায়ার আবির্ভাবের সঠিক দিন। খুঁটিকে ইন্দ্র জ্ঞানে পুজো করা। খুঁটি পুজোর আয়োজন প্রায় দেড়শ বছর আগে। তখন বারো ইয়ারির, বারোজন বন্ধুর, একত্রে পুজোর চল ছিল না। বিত্তবান বা জমিদার বাড়িতে রথযাত্রার দিন মা দুর্গার কাঠামোকে পুজো করে মাটির প্রলেপ দেওয়ার রীতি ছিল। সেই রীতি কে কিছুটা বদলে, বর্তমানে দুর্গাপুজো উপলক্ষে বহু বারোয়ারী পুজো কমিটি খুঁটি পূজোর আয়োজন করে থাকেন রথযাত্রার দিন।
কলকাতা ফুটবল মাঠে খুঁটি পুজোর একটা বিশেষ রীতি আছে। এবং সেটা পয়েলা বৈশাখের দিন। এই খুঁটি পুজো বারপোস্ট পুজো নামে খ্যাত। উদ্দেশ্যে টিম ভালো খেলবে, বেশি গোল করবে, চ্যাম্পিয়ন হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। দুর্গা পুজোর যে খুঁটি পুজো হয়, সেটা রথযাত্রার দিনই সাধারণত হয়ে থাকে।
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো যারা রথযাত্রার দিন খুঁটি পুজো করতে পারেন না কোন বিশেষ কারণে , তারা পরবর্তী যে কোন একটা শুভ দিন দেখে খুঁটি পুজো করে থাকেন। কলকাতায় সাধারণত যে সমস্ত বড় বড় দুর্গা পুজো কমিটি আছেন, তাঁরা খুঁটিপুজো করে থাকেন রথযাত্রার দিন। এখানে একটা ব্যতিক্রম দেখলাম এসবি পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির।
গত ১৫ ই এপ্রিল ২০২৩, পয়েলা বৈশাখ, ১৪৩০, বাঙালির নববর্ষের দিন, ঠাকুরপুকুর এসবি পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি খুঁটি পুজোর আয়োজন করেছিলেন। হয়তো বা বাংলা নববর্ষ কে নতুন মাত্রা দিতে এই পুজোর আয়োজন। মহিলা ও পুরুষ ঢাকির ঢাকের বাদ্য শরতের ফেলে আসা সেই স্মৃতি মেদুর দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দেয়। সমবেত সংগীত, অতিথিবরণ ইত্যাদি খুঁটিপুজোকে আরো বর্ণাঢ্য করে তুলেছিল। খুঁটিপুজো উপলক্ষে সাংসদ শ্রীমতি মালা রায়, রাজ্য পরিবহন মন্ত্রী শ্রী দিলীপ মন্ডল, যশস্বী ভাস্কর শ্রী বিমল কুন্ডু, সন্মানীয় চিত্রকর শ্রী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেত্রী শ্রীমতি নবনীতা দত্ত, মায়া আর্ট ও স্পেসের কর্ণধার শ্রীমতি মধুছন্দা সেন, প্রভৃতি গন্যমান্য ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে একটা আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছিল।
ঠাকুরপুকুর এস বি পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি প্রতিবছরই নতুন নতুন থিমের মধ্য দিয়ে পুজো মন্ডপ সাজিয়ে চমক দেন। এবারও আশা করা যায় পুজোয় নতুন কিছু চমক থাকবে এবং দর্শনার্থীর সমাগম চোখে পড়ার মতন হবে। ক্লাবের সভাপতি শ্রী সঞ্জয় মজুমদার জানালেন বিগত বছরগুলিতে ক্লাব বেশ কিছু পুরস্কার নিজেদের ঝুলিতে পুরে ফেলেছে। ওনারা আশা করেন এবারের পূজোতে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা তাদের ঝুলিতে থাকবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
What's Your Reaction?
Raj Kumar Mukherjee - sexagenarian. A father, a husband and a son, who has finally let go of excelsheets and PowerPoints and picked up a pen instead. A child at heart, he reminisces his childhood days and wishes that the world was a better place for all of us. An avid reader and storyteller at heart, he is spending his retirement by reading books, experimental cooking (mostly failures!) and writing.